বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের আর ২৪ ঘণ্টাও বাকি নেই। এর আগেই সব রকম প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন প্রার্থীরা।
নির্বাচনের দুদিন আগে গত ২৬ জানুয়ারি ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদের পরিচিতি পর্ব আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ইশতেহার তুলে ধরেন সভাপতি পদপ্রার্থী ইলিয়াস কাঞ্চন।
কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদের ২২ দফা ইশতেহার পাঠকের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো—
১. জাতির পিতার প্রতিষ্ঠিত এফডিসিতে প্রধানমন্ত্রীর আগমনের উদ্যোগ নেওয়া।
২. চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট ২০২১-এর নীতিমালা অনুযায়ী শিল্পীদের কল্যাণে সর্বোচ্চ ব্যবহার।
৩. প্রধানমন্ত্রীর কাছে চলচ্চিত্রের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য সহজ শর্তে বড় অঙ্কের ফান্ডের ব্যবস্থা করা।
৪. অন্যায়ভাবে যেসব সদস্যের সদস্যপদ বাতিল, স্থগিত ও ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে, তাদের অধিকার ফেরত দেওয়া ও সদস্যপদ পুনর্বহাল।
৫. শিল্পী সমিতির মর্যাদা রক্ষা ও সদস্যদের অধিকার সংরক্ষণে সচেষ্ট থাকা এবং কেউ একবার সদস্য হলে তাদের সদস্যপদ আজীবন সংরক্ষিত থাকবে। তবে সংগঠনের গঠনতন্ত্র ও রাষ্ট্রবিরোধী গুরুতর কর্মকাণ্ডে কারও সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ এলে এবং তদন্তসাপেক্ষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সদস্যপদ স্থগিত হতে পারে, যা সাধারণসভায় উত্থাপন করে চূড়ান্ত অনুমোদন নেওয়া হবে। যে কোনো দুর্যোগ, সমস্যা ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে শিল্পী সমাজের পাশে দাঁড়ানো ও সহায়তা করা।
৬. সহায়তা গ্রহণকারীদের সম্মান ও আত্মমর্যাদা রক্ষায় কোনো সহায়তা কর্মকাণ্ডের ছবি/ভিডিও জনসম্মুখে প্রকাশ না করা।
৭. আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে সব ধরনের ধর্মীয় উৎসবে (যেমন- দুই ঈদ, দুর্গাপূজা, বড়দিন ও বৌদ্ধ পূর্ণিমা) স্বল্প আয়ের সদস্যদের উৎসবভাতা ও উপহার প্রদানের ব্যবস্থা করা।
৮. পার্শ্ববর্তী দেশ ও বিভিন্ন দেশের শিল্পী সংগঠনের সঙ্গে পারস্পরিক মতবিনিময়।
৯. মতবিনিময় এবং শিল্পীবিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর।
১০. শিল্পীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।
১১. শিল্পী সমিতির ওয়েবসাইট সমৃদ্ধ করতে প্রযুক্তিগত আরও উন্নয়ন, সব শিল্পীর প্রোফাইল তৈরি করা। বিশেষ করে নৃত্য ও অ্যাকশন দৃশ্যে শিল্পীদের প্রোফাইল তৈরি করে আন্তর্জাতিক কাস্টিং ডিরেক্টরদের প্রদান করা। নৃত্য ও অ্যাকশন দৃশ্যে ভাষার ব্যবহার না থাকায় বিশ্বের যে কোনো দেশের চলচ্চিত্রে নৃত্য ও অ্যাকশন দৃশ্যে আমাদের শিল্পীরা যেন কাজ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করা, যা পার্শ্ববর্তী দেশ বিগত দিনে করেছে।
১২. শিল্পী সমিতির সভাপতিকে পদাধিকার বলে চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্যসহ তথ্য মন্ত্রণালয় ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র এবং সংস্কৃতি সংক্রান্ত বিভিন্ন কমিটিতে সমিতির নেতাদের প্রতিনিধিত্বের জন্য অন্তর্ভুক্তীকরণের ব্যবস্থা করা।
১৩. ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যে অভিনয় করা শিল্পীদের জন্য বিশেষ বীমা ও সবার জন্য গ্রুপ বীমার ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ।
১৪. শিল্পীদের চিকিৎসা কার্যক্রমের সুবিধার্থে কয়েকটি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক ল্যাবের সঙ্গে বিশেষ ছাড়ের জন্য চুক্তির উদ্যোগ ও বাস্তবায়ন।
১৫. শিল্পীদের মেধাবী সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান ও তাদের বাবা-মাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হবে।
১৬. চলচ্চিত্র শিল্পকে আরও সমৃদ্ধ ও অচলাবস্থা কাটিয়ে তুলতে চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব ও অভিজ্ঞদের নিয়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন ও নতুন প্রযোজকদের চলচ্চিত্রের পাণ্ডুলিপি থেকে শুরু করে ছবি মুক্তি পর্যন্ত যাবতীয় সহায়তা প্রদান।
১৭. চলচ্চিত্র সংক্রান্ত সব সংগঠনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং পারস্পরিক স্বার্থে মতবিনিময়।
১৮. শিল্পী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া। যেখানে সব ধরনের শিল্পী তৈরির পাঠ্যসূচি ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।
১৯. নৃত্যশিল্পীদের জন্য ড্যান্স স্টুডিও ও ফাইট অ্যান্ড স্টান্ট স্টুডিও এবং অত্যাধুনিক ইকুইপমেন্টসমৃদ্ধ জিমনেসিয়াম স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া।
২০. সব শিল্পী উপযোগী মেকআপ সেলুন ও পার্লার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া।
২১. শিল্পীদের পেশার মান বৃদ্ধিতে দেশের ও দেশের বাইরের কিংবদন্তি শিল্পীদের নিয়ে বিশেষ সেমিনার ও ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করা।
২২. প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় সফর ও বিদেশে সাংস্কৃতিক সফরে শিল্পীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।
সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনের ইশতেহার পাঠের সময় উপস্থিত ছিলেন তার প্যানেলের সহসভাপতি রিয়াজ, ডিএ তায়েব, কোষাধ্যক্ষ আজাদ, কার্যকরী পদে ফেরদৌস, কেয়া ও সীমান্ত।
কলমকথা/ সাথী
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।